রাজস্ব নীতি (Fiscal Policy)
সরকারি আয়, ব্যয় ও ঋণ সংক্রান্ত নীতিসমূহের একত্র সমাবেশকে রাজস্বনীতি বলে। দেশের অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যকে সফল করার জন্য রাজস্বনীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। সাধারণত নিম্নোক্ত উদ্দেশ্যে রাজস্বনীতি ব্যবহৃত হয়ঃ (১) উৎপাদনের উপাদানসমূহের কাম্য বিলিবণ্টন। (২) আয় ও সম্পদের বণ্টন। (৩) অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা। সরকারের রাজস্বনীতিকে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক স্থায়িত্বের কাজে ব্যবহার করা যায়। এই উদ্দেশ্য দুটি পরস্পরের পরিপূরক। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা যেমন অপরিহার্য, তেমনি স্থিতিশীল অর্থনীতি ছাড়া অর্থনৈতিক অগ্রগতিও সম্ভব নয়।
সরকারের রাজস্বনীতির উদ্দেশ্য কি হওয়া উচিত তা দেশের অর্থনীতির গতি ও প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। তাই সকল দেশের রাজস্বনীতির লক্ষ্য একরূপ নয়। যা হোক, রাজস্বনীতির সাধারণ লক্ষ্যসমূহ নিম্নে বর্ণিত হলঃ
১. দাম ও আয়স্তরের স্থিরতা রক্ষাঃ উৎপাদনকারী ও ভোগকারী উভয়ের স্বার্থেই দামস্তর স্থিতিশীল হওয়া বাঞ্ছনীয়। সরকার তার রাজস্বনীতির মাধ্যমে দামস্তরের অবাঞ্ছিত উঠানামা রোধ করতে পারে। তদুপরি, অনেক সময় অর্থনৈতিক বিকাশের স্বার্থে দেশের ভোগ-ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন হয় । সরকার রাজস্বনীতির সাহায্যে ব্যক্তি ও পরিবারের ভোগ-ব্যয় সুনিশ্চিত ও স্থিতিশীল করতে পারে। কোন দ্রব্যের ভোগ কমাতে হলে তার উপর সরকার অধিক হারে কর আরোপ করে। অন্যদিকে, কোন দ্রব্যের ভোগ বাড়াতে হলে সরকার তাকে ভর্তুকি দিতে পারে ।
২. পূর্ণ কর্মংস্থান অর্জনঃ উৎপাদনের উপাদানসমূহের পূর্ণ নিয়োগ লাভ করা সরকারের রাজস্বনীতির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। মন্দা দূর করে নিয়োগ বৃদ্ধি করতে হলে সমাজের কার্যকর চাহিদার পরিমাণ বাড়াতে হয়। সরকার তার রাজস্বনীতি পরিবর্তন করে সমাজের কার্যকর চাহিদা বৃদ্ধি করতে পারে। মন্দার সময় করভার হ্রাস করা হলে মানুষের হাতে ব্যবহারযোগ্য আয় বৃদ্ধি পায়। ফলে তাদের ভোগ-ব্যয় বৃদ্ধি পায়। এতে সমাজের মোট চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং তখন বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে উৎসাহিত হয়। এতে কর্মসংস্থানের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং সমাজ পূর্ণ নিয়োগস্তরে উপনীত হয় ।
আপনি আমাকে যেকোনো প্রশ্ন করতে পারেন, যেমনঃ
Are you sure to start over?